• March 26, 2023
২২ বছর পর বাবার পরিবারের সন্ধান পেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পাকিস্তানি তরুণী

২২ বছর পর বাবার পরিবারের সন্ধান পেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পাকিস্তানি তরুণী

ফেসবুক গ্রুপের কল্যাণে ২২ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া বাবাকে খুঁজে পেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পাকিস্তানি তরুণী তাহরিম রিদা। তার পৈত্রিক বাড়ি ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার ফাজিলের ঘাট এলাকায়।

গত বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৫৭ মিনিটে ব্যক্তিগত আইডি থেকে রিদা গ্রুপটিতে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আসসালামু আলাইকুম, আমি এখানে আমার বাবার পরিবার খুঁজতে এসেছি। আমার বাবা ২০০৪ সালে পাকিস্তান এসে আমার মাকে বিয়ে করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের ফেনী থেকে এসেছিলেন, তার নাম ছিল মুহাম্মদ কাসিম আজাদ, আমার দাদার নাম তফাজুল হক। যিনি সম্ভবত আমার বাবার শৈশবে অতিবাহিত হয়েছিলেন। আমি আমার বাবার পরিবার সম্পর্কে খুব বেশি বা প্রায় কিছুই জানি না।’

গ্রুপে নিজ চাচার একটি ছবি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আবু সাদিক আমার বাবার বড় ভাই। যদি কেউ এই পরিবার সম্পর্কে কিছু জানেন তাহলে আমার পরিবারের সঙ্গে দেখা করা হবে, এটা আমার জন্য খুবই আনন্দের হবে যা আমি কখনও দেখিনি।
স্ট্যাটাস দেওয়ার ২৩ মিনিটের মধ্যে বাবার পরিবারের সঙ্গে পরিচয় হয় রিদার। তাদের বাড়ি দাগনভূঞার ফাজিলের ঘাটে। ফুফু ও ফুফাত বোনের ছেলের সঙ্গে কথা হয় তার।

তাহরিমের দাবি, কলেজে বা বাইরে গেলে তার বাবার পরিচয় জানতে অনেকেই বিরক্ত করে। পিতৃপরিচয় না থাকায় অবহেলিত হতে হয়েছে ২২ বছর। তাহরিমের বাবা পাকিস্তান থাকাকালীন তার মাকে (মেহবুবা) বিয়ে করেন। পাকিস্তানে তার মাকে রেখে দেশে আসলে তার বাবা অসুস্থ হয়ে মারা যান। এরপর তার পরিবারের সঙ্গে আর কোনো পরিচয় ঘটেনি।

তাহরিম রিদার বাবা দেশে এসে তার মাকে চিঠি পাঠাতেন। চিঠিতে উল্লেখিত ঠিকানা সংগ্রহ করে তাহরিম ফেনী নামক শব্দটি পান। পরে গুগলে সার্চ করে জানতে পারেন ফেনী একটি জেলা। পরবর্তীতে ফেনী সার্চ করে গ্রুপটি পান। এরপর যাবতীয় ডিটেইলসসহ ফেসবুকে ইংরেজিতে পোস্ট করেন।

এরপর সেটি ট্রান্সলেশন করে বাংলায় পোস্ট দেয় অ্যাডমিন প্যানেল। দাগনভূঞার ওসি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় সোশ্যাল অ্যাক্টিভিটিসদের মাধ্যমে তাহরিমের বাবার পরিবারের কাছে বার্তা পৌঁছে যায়। উভয় পরিবার একে অপরকে এত বছর পর পেয়ে আবেগে আপ্লুত।

পিতৃপরিচয় পেয়ে তাহরিম রিদা জানান, ফেনীর মানুষকে কী বলে ধন্যবাদ দেবো তা বলার ভাষা আমার নেই। আমাকে যারা খুঁজে পেতে সহায়তা করেছে সবাইকে আল্লাহ নেক হায়াত দান করুক। খুব শিগগির আপনাদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। তাহমিদ রিদা এভাবে তার পরিবার খুঁজে পাবে কখনো কল্পনা করেননি। ফেসবুক গ্রুপের কারণে প্রায় ২২ বছর পর বাবার খোঁজ পেয়ে তার বহুদিনের কষ্ট দূর হয়েছে।

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *